বিদেশে মানবপাচার, গ্রেপ্তার দুই

বিদেশে মানবপাচার, গ্রেপ্তার দুই

মালয়েশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মানবপাচারেরর অভিযোগে রাজধানীর পল্লবী এলাকা থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।এরা হলেন- জালিস মাহামুদ (৩২) ও অমল জয়ধর (৪১)। তাদের বিরুদ্ধে বনানী থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা হয়েছে।

তাদের কাছ থেকে ৭১টি পাসপোর্ট, মালয়েশিয়ার ১১টি জাল ভিসা, ফ্রান্সের তিনটি জাল ভিসা, ২৪টি ভুয়া বিএমইটি ছাড়পত্রের ফটোকপি, আটটি ভুয়া মেডিকেল সার্টিফিকেট ও ১০টি ভুয়া বিমান টিকেট জব্দ করা হয়।

সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মালিবাগে সিআইডি প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর।

অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর বলেন, এরা বিভিন্ন জায়গা থেকে বিদেশ যেতে ইচ্ছুক স্বল্প শিক্ষিতদের টার্গেট করতো, এরপর ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে ভিসা যাচাই প্রক্রিয়া দেখাতো ভুক্তভোগীদের। তৈরি করতো জাল টিকিট, ভিসা ও বিএমইটি কার্ড। এ কাজের জন্য তাদের একটি অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ টিম রয়েছে।

এরা মালয়েশিয়া এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর কথা বলে লোক সংগ্রহ করতো। চক্রটি জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর অনুমোদন ছাড়া, তাদের কোনো রিক্রুটিং এজেন্সি বা লাইসেন্স না থাকা সত্ত্বেও চাকুরি ভিসায় মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে টাকা নিয়ে প্রতারণা করতো।

শেখ ওমর ফারুক আরো জানান, ভুক্তভোগীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এসএম এন্টারপ্রাইজ নামে ভুয়া রিক্রুটিং এজেন্সির পরিচালক জালিস মাহমুদ ও ফিল্ড অফিসার অমল জয়ধরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান রিপন মাহমুদ এখনও পলাতক। তাকে ধরতে অভিযান চলছে। বর্তমানে বনানীতে প্রতিষ্ঠানটির ভাড়া করা রুম থাকলেও নেই কোন কর্মচারী কর্মকর্তা। সবাই পালিয়েছে।

ভুক্তভোগীদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ২০১৯ সালের মে মাস থেকে বিদেশে লোক পাঠানোর নামে এই চক্রটি এখন পর্যন্ত ৬৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ জন ভুক্তভোগী সিআইডিতে অভিযোগ করেছেন।

ঘটনা ২০১৯ সালে হলেও ভুক্তভোগীরা কয়েকদিন আগে মামলা করেছে কেন– এমন প্রশ্নের জবাবে সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, এজেন্সিকে টাকা দিয়ে তা ফেরত নেওয়ার জন্য বারবার এজেন্সি লোকজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রতিবারই তারা সময় দিয়েছে। এছাড়া ভুক্তভোগীরা, স্বল্পশিক্ষিত। আইনি ব্যবস্থা নেবেন সে বিষয়ে তারা সাহস পাচ্ছিলেন না। সম্প্রতি বেশকিছু মানব পাচারকারী চক্র গ্রেপ্তারের ঘটনা গণমাধ্যমে প্রচার হয়, সেই পরিপ্রেক্ষিতে তারা আইনগত ব্যবস্থা নেয়।