প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন: মোঃ ইদ্রিস ফরাজী 

সিনিয়র রিপোর্টার, ঢাকাঃ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন: মোঃ ইদ্রিস ফরাজী 
ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

ইতালী আওয়ামী লীগের সভাপতি, শরিয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোঃ ইদ্রিস ফরাজী বলেন, শুরুতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সেদিন সেই কালরাতে যারা শহীদ হয়েছিলেন তাদেরকে আমি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। গত মাসে আমরা ইতিহাসের সব থেকে ভয়াবহ শোকের মাস কাটিয়েছি। মাঝে মাঝে আমি ভাবি ক্যালেন্ডারের পাতায় যদি এই মাসটি না থাকতো! ১৫ আগস্টের এই বর্বরতা শুধু কয়েকজন বিপদগামী উচ্চাভিলাষী সামরিক কর্মকর্তার দলবদ্ধ আস্ফালন ছিল না, এর পেছনে ছিল দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে সরিয়ে দিয়ে সরকারের পরিবর্তন আনাই শুধু নয়, পাকিস্তানি ভাবাদর্শে বাংলাদেশের যাত্রাপথ ঘুরিয়ে দেওয়াটাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। ১৫ আগস্টের ভোরেই হত্যার করা ‘জয় বাংলার পরিবর্তে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ এবং বাংলাদেশ বেতার পাল্টে করল রেডিও বাংলাদেশ (পাকিস্তান জিন্দাবাদ এবং রেডিও পাকিস্তানের অনুকরণে)। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বাংলাদেশে ঘটেছিল একটি জঘন্য, মর্মান্তিক ঘটনা। ঢাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে পূর্বপরিকল্পিতভাবে চালানো হয় গ্রেনেড হামলা। নৃশংস এই হামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী, আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। অলৌকিকভাবে বেঁচে যান তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা। সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরা নিজেদের জীবন বাজি রেখে মানবপ্রাচীর গড়ে তুলে রক্ষা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতিকে। ন্যাক্কারজনক এই গ্রেনেড হামলার সময় রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল বিএনপি। ক্ষমতাসীনরা এই জঘন্য হত্যাকাণ্ড ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে নানা মিথ্যাচার ও নাটকের অবতারণা করে। কিন্তু আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে এই হত্যাকাণ্ড তদন্ত নতুন করে শুরু হলে বেরিয়ে আসে অনেক লোমহর্ষক ঘটনা। আমরা একদিকে গর্বিত যে বঙ্গবন্ধুর কন্যা জীবিত ছিলেন সেই পঁচাত্তরের বিভীষিকাময় হত্যাকাণ্ড থেকে। সেদিন দেশে থাকলে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনাকেও শাহাদাতবরণ করতে হতো কারণ সেদিন সেই নরপশুরা ছোট্ট শিশু শেখ রাসেলকে ক্ষমা করেনি। আল্লাহ্র হয়তো ইচ্ছা ছিল বঙ্গবন্ধুর যে স্বপ্নের বাঙলার জন্য লাখ লাখ বাঙালি জীবন দিয়েছে, সেই স্বাধীন বাঙলার সুফল যাতে এই বাঙলার মানুষ ভোগ করতে পারে সেজন্য প্রত্যেকটা ষড়যন্ত্রের সময় আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা অলৌকিকভাবে বেঁচে গিয়েছেন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের সাফল্য ছিল ঈর্ষণীয়। অশান্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘শান্তি চুক্তি’ সম্পাদনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের মানুষের কাছে শান্তির দূত হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এছাড়াও দেশে খাদ্য ও কৃষিতে সাফল্যজনক উন্নয়নের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংগঠন পুরস্কার লাভ করেন। কিন্তু ২০০১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ আবার অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছিল। ঘোর অমানিশা গ্রাস করেছিল মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তির উত্থানে। মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী জামায়াতের গাড়িতে ৩০ লাখ শহীদের পবিত্র রক্তে অঙ্কিত জাতীয় পতাকা উড়তে দেখেছিল এই বাংলাদেশ। ২০০৪ সালে আর একটি শোকাবহ আগস্ট সৃষ্টি করতে চেয়েছিল একাত্তরের পরাজিত শক্তিরা। সিলেটের অহংকার কিবরিয়া, গাজীপুরের গর্ব আহসান উল্লাহ মাস্টার, নাটোরের বঙ্গবন্ধুর সৈনিক মমতাজ উদ্দিনকে জীবন দিতে হয়েছিল সেই অন্ধকার সময়েই। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আবার পেল উন্নয়নের প্রমিথিউস রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে। শোককে শক্তিতে, ভয়কে সাহসে জয় করে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে নিজেকে উৎসর্গ করার প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নামেলেন। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন ‘রূপকল্প-২০২১’ বাস্তবায়ন হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ। দারিদ্র্যতা, ক্ষুধা দূর হবে চিরতরে। গ্রাম হবে শহর। আজ সেই লক্ষ্য অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়ন করে চলছেন জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।