নালিতাবাড়ীতে প্রতিবন্ধি ভাতার কার্ড প্রদানে ঘুষ লেনদেনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ

নালিতাবাড়ীতে প্রতিবন্ধি ভাতার কার্ড প্রদানে ঘুষ লেনদেনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ

শেরপুর প্রতিনিধি:
প্রতিবন্ধি ভাতার কার্ড প্রদানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কর্তৃক ঘুষ লেনদেনের ঘটনা প্রকাশ হয়ে পড়ায় এ নিয়ে জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর মাঝে বাকবিতন্ডার জেরে সংঘর্ষে নারীসহ অন্তত দশজন আহত হয়েছে। এরমধ্যে একজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও অপরজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের কেরেঙ্গাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল প্রায় দুই বছর আগে কেরেঙ্গাপাড়া গ্রামের শারিরিক প্রতিবন্ধি আব্দুল হালিমের (২৩) কাছ থেকে ৪ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করে হালিমের নামে প্রতিবন্ধি ভাতার কার্ড করে দেন। এরপর কয়েক দফায় হালিম ভাতা উত্তোলন করে। সম্প্রতি স্মার্ট কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র কোনটিই না থাকায় অনলাইনে নিবন্ধন সংক্রান্ত জটিলতায় পড়ে হালিম। এমতাবস্থায় বিষয়টি বুঝে উঠতে না পেরে ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি প্রকাশ করে দেয়।
মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে স্থানীয়দের মাধ্যমে তথ্যের ভিত্তিতে বাংলার কাগজ পত্রিকা ও চ্যানেল বাংলার টিম তদন্তে যায়। তদন্তে সত্যতা পাওয়ার পর ইউপি সদস্যকে হালিমের অনলাইনে নিবন্ধন সংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতার অনুরোধ করে সোয়া ছয়টার দিকে চলে আসে।
এদিকে গণমাধ্যমকর্মীদের টিম চলে আসার পর ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল ও স্থানীয় যুবক সুজন মিয়া ও ফারুকদের মাঝে ঘুষ লেনদেনের ঘটনায় কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির জেরে ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল তার লোকজন নিয়ে অতর্কিতে সুজনের মুদি দোকানে গিয়ে তার উপর হামলা করে। এসময় ফেরাতে এলে সুজনের ছোট ভাই সুমন, ছোট ভাইয়ের স্ত্রী উর্মি, মা ফরিদা ইয়াসমিন, ছোট ভাই রাজুসহ বেশ কয়েকজন আঘাতপ্রাপ্ত হন। ভেঙ্গে ফেলা হয় সুজনের দোকানের আসবাব, তছনছ করে ফেলা হয় মালপত্র। অন্যদিকে প্রতিরোধ করতে গিয়ে পাল্টা হামলায় আহত হয় ইউপি সদস্য আব্দুল জলিলসহ তিনজন। 
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গুরুতর আহত সুজনকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা হাসপাতালে নিতে চাইলে ইউপি সদস্যের লোকজন তাদের উপর চড়াও হয় এবং হুমকী দেয়।
এদিকে নালিতাবাড়ী হাসপাতালে দুইপক্ষের কয়েকজন চিকিৎসা নিলেও সুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাতেই তাকে প্রথমে ময়মনসিংহ ও পরে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। ইউপি সদস্য আব্দুল জলিলের পক্ষের একজনকেও ময়মনসিংহ মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়।
এ বিষয়ে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমদ বাদল জানান, ঘটনা শোনেছি। অভিযোগ এলে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।